১১ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, রাত ২:২১
শিরোনাম :
শিরোনাম :
অমর একুশে বইমেলায় মনোয়ার মোকাররমের “আগামী বসন্তে” আজ বঙ্গবন্ধু গবেষক মিল্টন বিশ্বাসের জন্মদিন কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় এপার-ওপার বাংলার লেখকগণ জবিতে ‘মধুসূদন ও বাংলা সাহিত্য’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত দীনেশচন্দ্র সেনের বৃহৎবঙ্গ, বাংলার লোককৃষ্টির যুক্ত সাধনার ঐতিহ্য আলোচনা সভার প্রধান আলোচক মিল্টন বিশ্বাস স্বর্ণপদক পাচ্ছেন কথাসাহিত্যিক নাসরীন জেবিন যারা কবিতা ভালোবাসে তারা স্বচ্ছ মানসিকতার হয় : কবি কামাল চৌধুরী ফাঁসিতলা ক্লাব ও পাঠাগারের কার্যনির্বাহী কমিটির সাথে সাংসদ মনোয়ার হোসেন চৌধুরীর শুভেচ্ছা বিনিময় ফাঁসিতলা ক্লাব ও পাঠাগারের প্রথম কার্যনির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত ‘‘সাহিত্যে দুই মহামানব : গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু’’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক আলোচনা চক্রটি অনুষ্ঠিত
নোটিশ :
Wellcome to our website...

বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ,ভাস্কর্য ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ

রিপোর্টার
বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২১ পূর্বাহ্ন

বিকুল তাজিম।।

পৃথিবীতে এমন অনেক দেশ আছে, যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শুধু একটি ঘোষণা বা গণভোট বা ঔপনিবেশিক শাসক দেশের করুণায়।কিন্তু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে,কারো করুণায় নয়।হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন।তারপর ৯ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে লাল-সবুজের বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে।

এই ৯ মাস সময়ে দেশের জনসাধারণ মূলত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে রায় দিয়েছেন।অর্থাৎ,মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা উদ্ভুদ্ধ, তারা স্বাধীনতা চেয়েছেন।কিন্তু যারা এই চেতনার বিরোধী, তারা পাকিস্তানের সাথে থাকতে চেয়েছে।অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১, অসাম্প্রদায়িক – বৈষম্যহীন বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি জয় লাভ করেছে।ফলে তখনই বাংলাদেশের মূলনীতি নির্ধারিত হয়েছে, যার প্রতিফলন ‘৭২ এর সংবিধানে রয়েছে।

১ দিনের গণভোট বা করুণার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হলে, সেখানে জনগণের দীর্ঘমেয়াদী চিন্তার প্রতিফলন থাকে না।কিন্তু ‘৭১ এ বাংলাদেশের জনসাধারণ দীর্ঘমেয়াদী চিন্তার প্রতিফলন ঘটাতে পেরেছে ৯ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে।জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা এই ৪ টি মূলনীতির মাধ্যমে এ দেশ চলবে।এটা মীমাংসিত।এটাই ধ্রুব সত্য।

কিন্তু বঙ্গবন্ধু সপরিবারে শহীদ হবার পর থেকে এখন পর্যন্ত কেউ কেউ আবার এ দেশকে সাম্প্রদায়িক করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।তারই ধারাবাহিকতা হলো ‘৭১ এর পরাজিত শক্তি জামায়াত ইসলামী সহ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করা।

প্রকৃতপক্ষে, ধর্ম ও রাজনীতি কখনোই একসাথে চলতে পারে না।কারণ, ধর্মের মূলনীতির সাথে রাজনীতি পরিপূরক হতে পারে না।ধর্মের মৌলিক দলিলসমূহে ‘রাজনীতি’ শব্দটির উল্লেখ পর্যন্ত নেই।’আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই,হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর প্রেরিত রাসুল’ এই কথা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা এবং একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের আশায় ইবাদত করাই ইসলাম ধর্মের মূলনীতি।কিন্তু কিছু ধর্ম ব্যবসায়ী, ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে, পবিত্র গ্রন্থসমূহের অপব্যাখ্যা দিয়ে সহজ-সরল মানুষকে বিপথগামী করছে।ধর্ম পবিত্র বিষয়, শান্তির বিষয়, শাশ্বত মানবিক বিষয়, এটাই চিরন্তন সত্য।কিন্তু অপব্যাখ্যার ফলে সৃষ্টি হয় উগ্রবাদ-জঙ্গীবাদ ও মৌলবাদ।যা কোনো ধর্মই সমর্থন করে না।

মৌলবাদ হলো মূলত মূলকে আকড়ে ধরা।অর্থাৎ, যেকোনো মতবাদ যখন প্রতিষ্ঠিত হয়, সেই প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের নীতিমালা যারা যুগোপযোগী করতে চায় না, তারাই মৌলবাদী।আমি বিশ্বাস করি, ইসলাম ধর্মে মৌলবাদের কোনো স্থান নেই।কারণ, ইসলামের ভিত্তি হলো ৪ টি- কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াস।বিবর্তনের ফলে পৃথিবীতে নতুন নতুন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, এমন যেসব বিষয়ে কুরআন ও সুন্নাহ’য় সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই; সেসব বিষয়ে আলেমগণ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।এই প্রক্রিয়ার নামই হলো কিয়াস।যেমন- ইসলামে ছবি তুলা নিষিদ্ধ।কিন্তু বর্তমান সময়ে এনআইডিসহ যাবতীয় কাজে ছবির প্রয়োজন হয়।এমতাবস্থায়, প্রয়োজনের তাগিদে ছবি তুলতে নিষেধ নেই।এই সিদ্ধান্ত এসেছে কিয়াসের মাধ্যমে।

বর্তমানে ‘ভাস্কর্য’ সম্পর্কে অনেক আলোচনা হচ্ছে।প্রকৃতপক্ষে, ভাস্কর্য ও মূর্তির প্রধান পার্থক্য গঠনগত নয়, উদ্দেশ্যগত।অর্থাৎ, যদি পূজা করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়, তাহলে সেটা মূর্তি।যদি ইতিহাস, ঐতিহ্য ও চেতনা সমুন্নত রাখতে তৈরি হয়; তাহলে সেটা ভাস্কর্য।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্থপতি।তিনি বাংলাদেশের মৌলিক চেতনার পরিপূরক।তাই তাঁর ভাস্কর্য নির্মাণ অপরিহার্য।এই ভাস্কর্যের মাধ্যমে, তরুণ প্রজন্ম দুর্নীতিমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।তাই বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ, এখন সময়ের দাবি।একইসাথে এর রক্ষণাবেক্ষণকেও গুরুত্ব দিতে হবে।অন্যদিকে, কেউ যাতে কোনো ধর্মকে অবমাননা করতে না পারে, সেদিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।

এই বিষয়ে মৌলবাদীদের মতামতকে এত গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নাই।তারা এমন অনেক কিছুই বলে, যা পরবর্তীতে মেনে নেয়।সাধারণ শিক্ষা, ইংরেজি শিক্ষা, নারীর শিক্ষা ও কর্মসংস্থান প্রভৃতির বিরোধিতা করলেও; এখন তারা এর বিপক্ষে নয়।একসময় মোবাইল, টেলিভিশন ও ইন্টারনেট ব্যবহারের বিরোধিতা করলেও ; এখন তারাই বেশি ব্যবহার করছে।

অতএব, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত অসাম্প্রদায়িক ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে থাকবে। ঠিক যেভাবে, ‘৭১ এ বাংলাদেশ বুক টান করে মাথা উঁচু করে প্রতিরোধ করেছিল পাকিস্তানি হায়েনাদের।

( লেখক- সাবেক উপ শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর