২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, সকাল ৮:৫০
শিরোনাম :
শিরোনাম :
অমর একুশে বইমেলায় মনোয়ার মোকাররমের “আগামী বসন্তে” আজ বঙ্গবন্ধু গবেষক মিল্টন বিশ্বাসের জন্মদিন কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় এপার-ওপার বাংলার লেখকগণ জবিতে ‘মধুসূদন ও বাংলা সাহিত্য’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত দীনেশচন্দ্র সেনের বৃহৎবঙ্গ, বাংলার লোককৃষ্টির যুক্ত সাধনার ঐতিহ্য আলোচনা সভার প্রধান আলোচক মিল্টন বিশ্বাস স্বর্ণপদক পাচ্ছেন কথাসাহিত্যিক নাসরীন জেবিন যারা কবিতা ভালোবাসে তারা স্বচ্ছ মানসিকতার হয় : কবি কামাল চৌধুরী ফাঁসিতলা ক্লাব ও পাঠাগারের কার্যনির্বাহী কমিটির সাথে সাংসদ মনোয়ার হোসেন চৌধুরীর শুভেচ্ছা বিনিময় ফাঁসিতলা ক্লাব ও পাঠাগারের প্রথম কার্যনির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত ‘‘সাহিত্যে দুই মহামানব : গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু’’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক আলোচনা চক্রটি অনুষ্ঠিত
নোটিশ :
Wellcome to our website...

বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা : বঙ্গবন্ধুর নিভৃত সাম্রাজ্যের একমাত্র সম্রাজ্ঞী

রিপোর্টার
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৫০ পূর্বাহ্ন

মো. আহসান হাবিব।।                       

টুঙ্গিপাড়ার  ছোট্ট খোকার জাতির পিতা হয়ে ওঠা এবং বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনে সাফল্য পাওয়ার নেপথ্যে যে নারী জাদুর কাঠির মত কাজ করে গেছেন তিনিই বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব।

বাঙালির হৃদয়ে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার আরেক নাম বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব।তিনি প্রেরণা, শক্তি আর সাহসের উৎস হয়ে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনে নতুন মাত্রা এনে দিয়েছিলেন।বাংলার মুক্তিসংগ্রামের মহানায়কের প্রেরণাদাত্রী সহধর্মিণীর আজ ৯০ তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৩০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।তার বাবার নাম শেখ জহুরুল হক এবং মায়ের নাম হোসনে আরা বেগম। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। শৈশবে বাবা-মাকে হারানোর পর শেখ ফজিলাতুন্নেছা বেড়ে ওঠেন দাদা শেখ কাশেমের কাছে। মাতৃস্নেহে আগলে রাখেন তার চাচি এবং পরবর্তী সময়ে শাশুড়ি বঙ্গবন্ধুর মা সায়েরা খাতুন। পিতার অভাব বুঝতে দেননি বঙ্গবন্ধুর বাবা শেখ লুৎফুর রহমান। তাদের আদরেই বড় হয়ে ওঠেন তিনি। নিজের সন্তানদের সঙ্গে শৈশবে শেখ ফজিলাতুন্নেছাকেও ভর্তি করে দেন স্থানীয় মিশনারি স্কুলে। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া আর এগোয়নি। তবে ঘরে বসেই পড়াশোনা করেছেন তিনি। মাত্র ১৩ বছর বয়সের শেখ মুজিবের সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন তিনি। বিয়ে হলেও বঙ্গবন্ধু এন্ট্রান্স পাস করার পরই মূলত তাদের সংসার জীবন শুরু হয়। তাদের বিয়ের ফুলশয্যা হয়েছিল ১৯৪২ সালে।

বেগম মুজিব ছিলেন একজন ন্যায়, ধর্মপরায়ণ, আদর্শবান, পরোপকারী ও সরল মনের মানুষ। দাম্ভিকতা কিংবা অহংকার তাঁকে কখনো স্পর্শ করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ যেমন অভিন্ন সত্ত্বা ঠিক তেমনি বঙ্গবন্ধু ও শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবও যেন একই আত্মা।

জাতির পিতার জীবনে বঙ্গমাতার প্রভাব অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বেগম মুজিব মনে- প্রাণে একজন সর্বংসহা আদর্শ বাঙালি নারী। জীবনে নিয়েছেন ঝুঁকি,পোহাতে হয়েছে কষ্ট- দুর্ভোগ। বঙ্গবন্ধু জীবনের অধিকাংশ সময় অতিবাহিত করেছেন দেশ ও দেশের মানুষের জন্য। কখনো কারাগারে, কখনো  দেশে বা  দেশের বাহিরে। ফলশ্রুতিতে প্রিয়তম স্বামীকে কাছে না পেয়ে বঙ্গজননী কখনো বিচলিত না হয়ে বরং ধৈর্যশীল বাঙালি নারী হয়ে সন্তান – পরিবারকে সামাল দিয়েছেন।

বঙ্গবন্ধুর লেখক হওয়ার উৎস ও অনুপ্রেরণাও বঙ্গমাতা নিজে। বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম দলিল হিসেবে  ” অসমাপ্ত আত্মজীবনী ” এবং  ” কারাগারের রোজনামচা ” গ্রন্থ দুইটি আমরা পেয়েছি তাঁরই উৎসাহ ও উদ্দীপনায়। “অসমাপ্ত আত্মজীবনী”র শুরুতে সেই বিষয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত আমরা পেয়ে থাকি। “আমার সহধর্মিণী একদিন জেলগেটে বসে বললো,বসেই তো আছো, লেখো তোমার জীবনের কাহিনী”।

দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধে অবিচল এক মা বঙ্গমাতা শেখ মুজিব। কারাবরণ ও রাজনৈতিক কারণে জাতির পিতা সংসারের দেখভাল করতে না পারাটা বেগম মুজিবের কাছে কখনো দৃষ্টিকটু ছিল না বরং স্বামীকে দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে উৎসাহ দিয়েছেন। স্বামীর বন্দিকালে সংসারের ভার বহন করেছেন, সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেছেন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের। অগণিত কর্মীর খোঁজ রেখেছেন, যাদের বাড়িতে খাবার ছিল না তাদের খাবারের ব্যবস্থা করতেন। নেতা- কর্মীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতেন। সত্যিকারের মায়ের মত পরম যত্নে মমতার আঁচলে সবাইকে এভাবেই আগলে রাখতেন।

বঙ্গমাতার অন্যতম একটি শখ বই পড়া। বঙ্গবন্ধু যখন রাজনৈতিক কারণে  বাহিরে বাহিরে থাকতেন তখন সাংসারিক কাজের অবসরে  তিনি শরৎ,নজরুল, বিভূতিভূষণ প্রমুখকে পড়তেন। গানও শুনতেন। স্বামী বাড়িতে ফিরলে পঠিত বইয়ের বিষয়বস্তু  নিয়ে আলোচনা করতেন।

শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব কেবল একজন মা- ই নন পিতাও বটে। স্বামীর জেলে থাকাকালীন সন্তানদের পিতৃস্নেহ দিয়েছেন তিনি। কখনোই পিতার অভাব সন্তানদের বুঝতে দেননি।

পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুর উপর জেল- জুলুম, মামলা অব্যাহত রেখেছিল, নিজের ঘরের আসবাবপত্র, অলংকার বিক্রি করে সংসার এমনকি সংগঠন ও নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন বঙ্গমাতা। আমেরিকা থেকে আনা ফ্রিজটি সেদিন বিক্রি করে দিয়েছিলেন তিনি। সংসারে টাকার অভাব ছিল সেটা সন্তানদের বুঝতে না দিয়ে বরং তাদের বলেছিলেন- “ঠাণ্ডা পানি খেলে সর্দি- কাশি হয়, গলা ব্যথা হয়, ঠাণ্ডা পানি খাওয়া ঠিক না। কাজেই এটা বিক্রি করে দিই “। সংসারের অভাব অনটনের কথা তাঁর মুখে কখনো শোনা যায়নি। শত প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও পর্বতের ন্যায় অবিচল ছিলেন বঙ্গমাতা।

বাঙালির ত্যাগ, সংগ্রাম ও অর্জনে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। জাতির পিতা তাঁর  রাজনৈতিক জীবনে দুটি জিনিসকে প্রধান শক্তি হিসেবে মানতেন। একটি এদেশের স্বাধীনতাকামী জনতা অপরটি প্রিয়তমা স্ত্রী বেগম মুজিব।

বঙ্গমাতার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা খুব বেশি না হলেও তিনি অত্যন্ত বুদ্ধিমতী, জ্ঞানী ও বিচক্ষণতা সম্পন্না নারী ছিলেন। যা খুব ভালো করেই জানতেন বঙ্গবন্ধু। লাহোরে গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য পাকিস্তান সরকার শেখ মুজিবকে প্যরোলে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, কিন্তু বঙ্গমাতা প্যারোলে মুক্তি মানতে নারাজ। এমনকি এতে কঠোর আপত্তিও জানিয়েছিলেন। তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা দিয়ে সেদিন বঙ্গমাতা পূর্ববাংলার আন্দোলনের গতি দেখে ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন – বঙ্গবন্ধুর নিঃশর্ত মুক্তিই হবে। আর সেটাই হয়েছিল। ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুসহ সবাইকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়েছিল পাকিস্তান সরকার। ঠিক পরের দিন ২৩ ফেব্রুয়ারি বাঙালি শেখ মুজিবকে  ” বঙ্গবন্ধু ” উপাধিতে ভূষিত করেছিল।

বাংলাদেশের প্রথম ফার্স্টলেডি হয়েও জীবন যাপন করেছেন অতি সাধারণ নারীর মতো। একজন মন্ত্রীর স্ত্রী হয়েও বিলাসিতাপূর্ণ আড়ম্বর জীবন অতিবাহিত না করে সাদামাটা জীবনযাপন করেছেন। দামি শাড়ি,গহনা,অলংকার এগুলোর প্রতি তাঁর কখনো লোভ ছিল না। স্বামীর কাছে চাওয়া বা দাবি করতেন না। এবিএম মূসার এক কলামে ৩২ নম্বরের ঐ বাড়ির সেই বঙ্গজননীর সাদামাটা জীবনের প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে এভাবে- “বঙ্গবন্ধু যখন দেশের প্রেসিডেন্ট তখন একদিন তার বাড়িতে গেলাম তার সঙ্গে দেখা করতে।ভাবি পানের থালাটা হাতে নিয়ে সামনে এলেন। পান বানিয়ে একখানা আমার দিকে দিলেন। আর একখানা নিজে মুখে দিলেন “।

বঙ্গমাতা কখনো মিডিয়া কিংবা পত্র- পত্রিকায় এমনকি খবরেও আসতে চাইতেন না।তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বাহিরের কোনো অনুষ্ঠানেও যেতে পছন্দ করতেন না।  কিন্তু পর্দার আড়াল থেকে দেশমাতৃকার স্বাধীনতার জন্য বঙ্গপিতাকে উৎসাহ, শক্তি, সাহস ও অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন। বেগম মুজিব আসলেই বাঙালি জাতির মাতা, যিনি ক্ষমতার কেন্দ্রে থেকেও একজন অতি সাধারণ নারী। ভিনদেশী মেহমানরাও বঙ্গমাতার এই রূপ দেখে মুগ্ধ।

উত্তাল মার্চে ঐতিহাসিক ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুকে  তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দিতে হবে। ইতোমধ্যে বাড়িতে অনেকেই এসেছে। এ বলছে এটা বলতে হবে, ও বলছে না এটা বলতে হবে। এসব শুনে জাতির পিতা বিচলিত। কারটা শুনবে, আর কারটা বলবে এটা ভেবে চিন্তিত । কিন্তু সেদিন শান্তির দূত হয়ে বেগম মুজিব বঙ্গবন্ধুকে আলাদা ঘরে নিয়ে, ১৫ মিনিট বিশ্রাম নিতে বললেন। বঙ্গমাতা বললেন – ” অনেকেই অনেক কথা বলবে। তুমি সারা জীবন আন্দোলন সংগ্রাম করেছ, তুমি জেল খেটেছ।তুমি জান কী বলতে হবে? তোমার মনে যে কথা আসবে সে কথাই বলবা “। তিনি আরও বলেছিলেন,  ” মনে রেখো- তোমার সামনে আছে জনতা, এবং পিছনে বুলেট।তোমার মন যা চাইছে তুমি শুধু সেটাই আজ করবে “।সেদিন প্রিয়তমা স্ত্রীর কথাই মন দিয়ে শোনেন এবং উজ্জীবিত জনসমুদ্রে তর্জনি উঁচিয়ে ঘোষণা দেন,  ” এবারের সংগ্রাম- আমাদের মুক্তির সংগ্রাম;এবারের সংগ্রাম – আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম ;”। স্বাধীনতাকামী বাঙালি ভাষণের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই মুক্তির নেশায় যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং কাঙ্ক্ষিত মুক্তি লাভ করে।

রাজনীতির দীর্ঘ কণ্টকাকীর্ণ পথ পাড়ি দিতে মানবিক নারীর সহযোগিতা প্রদানে শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের ভূমিকা সত্যিই ব্যতিক্রম।

মেয়েদের আত্মমর্যাদাশীল করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান বঙ্গমাতার। মেয়েদের শিক্ষিত করে তুলতে নিজের বাড়িতে স্কুল খুলেছেন, মেয়েদের সেলাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। এমনকি স্বাধীনতার পর বীরাঙ্গনাদের আত্মমর্যাদা সমুন্নত রাখতে অসামান্য ভূমিকা পালন করেন। বীরাঙ্গনাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ” আমি তোমাদের মা “তিনি আরও বলেন,   ” এই বীরাঙ্গনা রমণীদের জন্য জাতি গর্বিত। তাদের লজ্জা কিংবা গ্লানিবোধের কোনো কারণ নেই। কেননা তারাই প্রথম প্রমাণ করেছেন যে কেবল বাংলাদেশের ছেলেরাই নয়, মেয়েরাও আত্মমর্যাদাবোধে কী অসম্ভব বলীয়ান।’’ ( দৈনিক বাংলার বাণী, ১৭ ফাল্গুন ১৩৭৯ বঙ্গাব্দ)

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ককে আড়াল থেকে সাহস ও প্রেরণাদাত্রী  বেগম মুজিব ৭১ – এ নিজের ডানার আড়ালে সন্তানদের আগলে রেখে নিজেই নিজেকে সান্ত্বনা দিতেন। সন্তানদের বলতেন,  “কতবার কত দুর্দশায় পড়েছি,এবার না হয় একটু বেশি কষ্ট হবে।’’

বঙ্গজননী প্রিয়তম স্বামীকে আমৃত্যু ভালোবাসতেন। সে ভালোবাসা কতটা হৃদয়াঙ্গম ছিল  সে চিত্র ৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যারকালে নিদারুণ ভাবে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বঙ্গমাতা সেদিন সিঁড়িতে বঙ্গবন্ধুর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে ঘাতকদের বলেছিলেন,  ” তোমরা আমাকে এখানেই মেরে ফেল। ” শুধু জীবদ্দশায় না বরং মরণাকলেও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গী হয়েছেন মহীয়সী এই নারী।

রাজনীতির কবি, ইতিহাসের রাখাল রাজা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সাফল্যের মূলে বেগম মুজিবের অবদান সত্যিই ক্যারিশম্যাটিক ও  একই সঙ্গে মুজিব এবং বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক ছিল।

রাজনীতি ও সংগঠন চালাতে অর্থের প্রয়োজন। তা সাধ্যমত বেগম মুজিব বঙ্গবন্ধুকে জোগাড় করে দিতেন। নিজের হাত খরচের টাকা কিংবা পৈতৃক সম্পত্তি থেকে প্রাপ্ত টাকা স্বামীকে দিতেন। যা   ’ অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ তে বঙ্গবন্ধু লিখে গেছেন।  ” রেণু খুব কষ্ট করত, কিন্তু কিছুই বলত না, নিজে কষ্ট করে আমার জন্য টাকা – পয়সা জোগাড় করে রাখত যাতে আমার কষ্ট না হয়। ” 

মামলার বিষয়ে কোর্টে গেছেন, বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছেন, পরিবারের ভার বহন করেছেন। নেতা- কর্মীদের দেখভাল করেছেন।একজন দক্ষ ও নীরব সংগঠক হয়ে বঙ্গবন্ধুর ছায়াসঙ্গী হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর নিভৃত সম্রাজ্যের একমাত্র সম্রাজ্ঞী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাত্রিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তিন ছেলে, দুই পুত্রবধূ, আত্মীয়-স্বজনসহ সেনাবাহিনীর নিম্নপদস্থ কিছু দুষ্কৃতকারীর বুলেটের আঘাতে তিনি শাহাদতবরণ করেন। বঙ্গমাতা  আজ আমাদের মাঝে নেই। তবে  প্রতিটি দেশপ্রেমিক জনতার হৃদয়ের মণিকোঠায় তিনি চিরকাল  থাকবেন। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে তাঁর দেশপ্রেম ও আদর্শ অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

 (লেখক: মো. আহসান হাবিব, সদস্য, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম ও সাবেক শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর